Monday 25 December 2023

সুরের সন্ধানে

সুরের সন্ধানে

বাবার মুখে শোনা,  খুব সম্ভবত পণ্ডিত বুদ্ধদেব দাসগুপ্ত হবেন (প্রায় তিন দশক আগের স্মৃতি, তাই ভুল হলে মার্জনা ভিক্ষা করছি), একবার কোন এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানে মাজপথে বাজনা থামিয়ে এদিক ওদিক চাইছেন। সবাই জানতে চাইলেন কী হয়েছে। পণ্ডিতজী জবাব দিয়েছিলেন, সুর খুঁজছি। এভাবেই হারিয়ে যাওয়া সুরের খোঁজে আমার নিরন্তর পথ চলা। YouTube খুঁজছি, Google খুঁজছি, কিন্তু তাকে পাচ্ছি কোথায়! 

হারমোনিয়াম
পুরোপুরি গান-বাজনার আবহাওয়ায় বড় হলেও সে ভাবে গান শিখিনি। 

তবু মাঝে মাঝেই কানে ভেসে আসে বাবার গলায় গাওয়া গজল বা ভজন বা কোন classical গানের বন্দিশ। সুর-ছন্দের মাদকতায় আর প্রাণময় প্রকাশ ভঙ্গীতে সেই সঙ্গীত ঠিক কোন পর্যায়ে পৌঁছত তা নিরীক্ষণ করার মত বিদ্বজন আমি হতে পারিনি।

তবে মনে আছে, রানাঘাট বাড়িতে বাবার গান - ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলে ... এবং তারপর অসাধারণ কিছু ভক্তিগীতি। গান যখন চলছে, সবার চোখে জল। নিজের চোখে দেখা। তবে সেই বয়সে আমার অনুভূতি ততটা সংবেদনশীল ছিল না। 

এখনো বাবার বেশ কিছু গানের সুর, আর মুখরা, কানে বাজে । YouTUBE - এ দেখেছি। কথার মিল থাকলেও বাবার মত সুরের মাদকতায় ভরা নয় সেই সব পরিবেশনা। 

যেমন - কদিন ধরেই এই প্রসিদ্ধ ভজনের সুরটা ঘুরছে মাথার মধ্যে-

ঊধো কারমান কী গতি ন্যাড়ি. . .

Udhoo karmana ke gati nayari

YouTube - এ আছে, বন্দিশ মিলেছে, কিন্তু সুর ? বাবা যেভাবে পরিবেশন করতেন সেই সুর কোথায়? যে ভারত বিখ্যাত গায়ক- গায়িকারা এই সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন, প্রতিটি - ই অসাধারণ। কিন্ত বাবা যে সুরে এই গান পরিবেশন করতেন তার সঙ্গে খুব একটা মিল নেই। 

তাই আমিও এখন সেই হারান সুর খুঁজছি।

খুব নিবিড় ভাবে। 

তখন তো এত রেকর্ডিং - এর ক
থা ভাবা হত না, তাই হয়ত রেকর্ড করা হয় নি। বা হলেও হয়ত সংরক্ষণ করা হত না।

তখন বুঝিনি একগুলিই আসল হীরে - জহরত। 

আমাদের থেকে লক্ষ্য-যোজন দূরের কোন সুরালোকে বাবা হয়তো এখন এই গানটি - ই পরিবেশন করছেন।


শুভ বড়দিন। 

২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩  


ছবিটি গুগুল থেকে নেওয়া। যদি ছবিটির ব্যবহারের জন্য কার কোন আপত্তি থাকে অনুগ্রহ করে জানাবেন, বিনা বাক্যব্যয়ে ছবিটি ডিলিট করা হবে।